বুধবার, ২ মার্চ, ২০১৬

কুরানুল কারিম হাফেজি করার মর্যাদা ও ফজিলত

কুরআনুল কারিম হিফয করার ফজিলত
১. শয়তান থেকে ঘর নিরাপদ থাকে: সাধারণত হাফিয ও হিফয-শাখার ছাত্ররা সবচেয়ে বেশী কুরআন তিলাওয়াত করেন, তাই তাদের ঘর শয়তান থেকে নিরাপদ থাকে। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
্রلاَ تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ مَقَابِرَ، إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْفِرُ مِنَ البَيْتِ الَّذِي تُقْرَأُ فِيهِ سُورَةُ البَقرَةِগ্ধ. رواه مسلم
“তোমাদের ঘরগুলোকে তোমরা কবরে পরিণত করো না, নিশ্চয় সে ঘর থেকে শয়তান পলায়ন করে, যেখানে সূরা বাকারাহ পাঠ করা হয়।”
২. হাফিযগণ আল্লাহর পরিবার ভুক্ত: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
্রإِنَّ لِلَّهِ أَهْلِينَ مِنَ النَّاسِগ্ধ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ هُمْ؟ قَالَ: ্রهُمْ أَهْلُ الْقُرْآنِ أَهْلُ اللَّهِ وَخَاصَّتُهُগ্ধ.
“নিশ্চয় মানুষদের থেকে আল্লাহর কতক পরিবার (নিজস্ব লোক) রয়েছে, তারা বলল: হে আল্লাহর রাসূল তারা কারা? তিনি বললেন: তারা আহলে কুরআন, আল্লাহর পরিবার ও তার বিশেষ ব্যক্তিবর্গ”। কুরআনুল কারিমের হাফিয আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত, একজন মুসলিমের হিফয হওয়ার জন্য এ প্রেরণাই যথেষ্ট, এটা তাদের প্রতি আল্লাহর মহান অনুগ্রহ।
৩. হাফিযগণ সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
্রاغْتَنِمْ خَمْسًا قَبْلَ خَمْسٍ: شَبَابَكَ قَبْلَ هِرَمِكَ، وَصِحَّتَكَ قَبْلَ سَقَمِكَ، وَغِنَاءَكَ قَبْلَ فَقْرِكَ، وَفَرَاغَكَ قَبْلَ شُغْلِكَ، وَحَيَاتَكَ قَبْلَ مَوْتِكَগ্ধ.
“পাঁচটি বস্তুকে পাঁচটি বস্তুর পূর্বে গণিমত মনে কর: তোমার যৌবনকে তোমার বার্ধক্যের পূর্বে; তোমার সুস্থতাকে তোমার অসুস্থতার পূর্বে; তোমার সচ্ছলতাকে তোমার অভাবের পূর্বে; তোমার অবসরতাকে তোমার ব্যস্ততার পূর্বে এবং তোমার জীবনকে তোমার মৃত্যুর পূর্বে”। আহলে-কুরআন কখনো তিলাওয়াত করেন, কখনো হিফয করেন, কখনো গবেষণা করেন, কখনো তার উপর আমল করেন। এভাবে তারা প্রতি মুহূর্তের সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারেন।
৪. হাফিযদের ঈমান উত্তরোত্তর বর্ধিত হয়: হাফিযগণ সর্বাধিক কুরআনুল কারিম তিলাওয়াত করেন, তাই তারা সবচেয়ে বেশী নবী-রাসূলদের বিজয়ের কাহিনী, কাফেরদের পরাজয়ের ঘটনা, মুমিনদের প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও কাফেরদের প্রতি তার গোস্বার বাণী পড়েন ও শ্রবণ করেন, যার ফলে তাদের ঈমান বর্ধিত হয়। জুনদুব ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন:
্রكُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ فِتْيَانٌ حَزَاوِرَةٌ، فَتَعَلَّمْنَا الْإِيمَانَ قَبْلَ أَنْ نَتَعَلَّمَ الْقُرْآنَ، ثُمَّ تَعَلَّمْنَا الْقُرْآنَ فَازْدَدْنَا بِهِ إِيمَانًاগ্ধ.
“আমরা যখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম, তখন সবেমাত্র কৈশোরে পদার্পণ করেছি। অতএব কুরআন শিখার আগে আমরা ঈমান শিখেছি, অতঃপর কুরআন শিখেছি, আর তার দ্বারা আমরা আমাদের ঈমান বৃদ্ধি করেছি”।
৫. হাফিযগণ তাহাজ্জুদের স্বাদ অনুভব করে: হিফযের বদৌলতে হাফিযগণ তাহাজ্জুদের স্বাদ অনুভব করেন, হিফয না-থাকার কারণে অনেকে এ স্বাদ থেকে বঞ্চিত হয়। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
্রمَنْ قَامَ بِعَشْرِ آيَاتٍ لَمْ يُكْتَبْ مِنَ الْغَافِلِينَ، وَمَنْ قَامَ بِمِائَةِ آيَةٍ كُتِبَ مِنَ الْقَانِتِينَ، وَمَنْ قَامَ بِأَلْفِ آيَةٍ كُتِبَ مِنَ الْمُقَنْطِرِينَগ্ধ.
“যে ব্যক্তি দশ আয়াত নিয়ে কিয়াম করল, তাকে গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় না, আর যে এক-শো আয়াত নিয়ে কিয়াম করল, তাকে কানেতিন তথা ইবাদতকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, আর যে এক-হাজার আয়াত নিয়ে কিয়াম করল, তাকে মুকানতিরিণ তথা অনেক সওয়াব অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়”। কুরআনুল কারিম হিফয করা ব্যতীত এ সাওয়াব অর্জন করা সম্ভব নয়।
৬. হাফিযগণ অগ্রাধিকার প্রাপ্ত: সালাত ইসলামের দ্বিতীয় রোকন, তাতে ইমামতের হকদার কুরআনুল কারিমের হাফিযগণ। আবু মাসউদ আনসারি রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
্রيَؤُمُّ الْقَوْمَ، أَقْرَؤُهُمْ لِكِتَابِ اللَّهِ، فَإِنْ كَانُوا فِي الْقِرَاءَةِ سَوَاءً، فَأَعْلَمُهُمْ بِالسُّنَّةِ، فَإِنْ كَانُوا فِي السُّنَّةِ سَوَاءً، فَأَقْدَمُهُمْ هِجْرَةًগ্ধ.
“কওমের মধ্যে কুরআনের অধিক পাঠক (ধারক) তাদের ইমামত করবে; যদি তারা কিরাতে বরাবর হয়, তাহলে সুন্নত সম্পর্কে অধিক জ্ঞানী, যদি তারা সুন্নতে বরাবর হয়, তাহলে হিজরতে অগ্রগামী ব্যক্তি ইমামত করবে”।
শুধু জীবিত অবস্থায় নয়, মৃত অবস্থায় কবরেও তারা অগ্রাধিকার প্রাপ্ত। জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদের শহীদদের দু’জনকে এক কাপড়ে কাফন দিচ্ছিলেন, অতঃপর বলতেন:
্রأَيُّهُمْ أَكْثَرُ أَخْذًا لِلْقُرْآنِ؟، فَإِذَا أُشِيرَ لَهُ إِلَى أَحَدِهِمَا قَدَّمَهُ فِي اللَّحْدِ، وَقَالَ: أَنَا شَهِيدٌ عَلَى هَؤُلَاءِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَأَمَرَ بِدَفْنِهِمْ فِي دِمَائِهِمْ، وَلَمْ يُغَسَّلُوا، وَلَمْ يُصَلَّ عَلَيْهِمْগ্ধ.
“তাদের মাঝে কুরআনের অধিক ধারক কে”? যখন তাদের কাউকে চিহ্নিত করা হত, তিনি তাকে কবরে আগে রাখতেন; এবং বলতেন: “কিয়ামতের দিন আমি তাদের সাক্ষী হব”। তিনি তাদেরকে তাদের রক্তসহ দাফন করার নির্দেশ দেন, তাদের গোসল দেওয়া হয়নি এবং তাদের উপর সালাত আদায় করাও হয়নি”। অতএব কুরআনুল কারিমের হাফিয জীবিত ও মৃত উভয় অবস্থায় অগ্রাধিকার প্রাপ্ত।
৭. হাফিযগণ জান্নাতের উঁচু মর্যাদার অধিকারী: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
্রيُقَالُ لِصَاحِبِ الْقُرْآنِ: اِقْرَأْ وَارْتَقِ وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِي الدُّنْيَا، فَإِنَّ مَنْزِلَتَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَؤُهَاগ্ধ.
“কুরআনের ধারককে বলা হবে, ‘তুমি পড় ও চড় এবং তারতীলসহ পড়, যেভাবে তারতীলসহ দুনিয়াতে পড়তে। কারণ, তোমার মর্যাদা সর্বশেষ আয়াতের নিকট, যা তুমি পড়বে।” অপর হাদিসে এসেছে:
্রيَجِيءُ الْقُرْآنُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُولُ: يَا رَبِّ حَلِّهِ فَيُلْبَسُ تَاجَ الْكَرَامَةِ، ثُمَّ يَقُولُ: يَا رَبِّ زِدْهُ فَيُلْبَسُ حُلَّةَ الْكَرَامَةِ، ثُمَّ يَقُولُ: يَا رَبِّ ارْضَ عَنْهُ فَيَرْضَى عَنْهُ، فَيُقَالُ لَهُ: اقْرَأْ وَارْقَ وَتُزَادُ بِكُلِّ آيَةٍ حَسَنَةًগ্ধ.
“কিয়ামতের দিন কুরআন আসবে ও বলবে: হে আমার রব, তাকে পরিধান করাও, তাকে সম্মানের টুপি পড়ানো হবে। অতঃপর সে বলবে: হে আমার রব, তাকে বৃদ্ধি করে দাও, তাকে সম্মানের অলঙ্কার পড়ানো হবে, অতঃপর সে বলবে: হে আমার রব তার উপর সন্তুষ্ট হও, তিনি তার উপর সন্তুষ্ট হবেন। অতঃপর তাকে বলা হবে: পড় ও উপড়ে চর এবং প্রত্যেক আয়াতের মোকাবিলায় একটি করে নেকি বর্ধিত করা হবে”।
৮. হাফিযগণ ঈর্ষার পাত্র: আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
্রلَا حَسَدَ إِلَّا فِي اثْنَتَيْنِ: رَجُلٌ عَلَّمَهُ اللَّهُ الْقُرْآنَ فَهُوَ يَتْلُوهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ، فَسَمِعَهُ جَارٌ لَهُ، فَقَالَ: لَيْتَنِي أُوتِيتُ مِثْلَ مَا أُوتِيَ فُلَانٌ فَعَمِلْتُ مِثْلَ مَا يَعْمَلُ، وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا فَهُوَ يُهْلِكُهُ فِي الْحَقِّ، فَقَالَ رَجُلٌ: لَيْتَنِي أُوتِيتُ مِثْلَ مَا أُوتِيَ فُلَانٌ فَعَمِلْتُ مِثْلَ مَا يَعْمَلُগ্ধ.
“দু’জন্য ব্যক্তি ব্যতীত কোনো হিংসা নেই, এক ব্যক্তি যাকে আল্লাহ কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন, সে তা দিন-রাতের বিভিন্ন অংশে তিলাওয়াত করে। অতঃপর তার এক প্রতিবেশী শুনে বলে: যদি আমাকে অনুরূপ দেওয়া হত, যেরূপ অমুককে দেওয়া হয়েছে তাহলে আমিও তার মত আমল করতাম। আর অপর ব্যক্তি-যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন, সে তা সত্য পথে খরচ করে। এক ব্যক্তি বলল: যদি অমুককে যেরূপ দেওয়া হয়েছে আমাকেও সেরূপ দেওয়া হয়, তাহলে আমিও করব যেরূপ সে করে”।
৯. হাফিযগণ দজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপদ: দজ্জালের আত্মপ্রকাশ কিয়ামতের সবচেয়ে বড় আলামত, দুনিয়াতে তার চেয়ে বড় কোনো ফিতনা নেই। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
্রمَنْ حَفِظَ عَشْرَ آيَاتٍ مِنْ أَوَّلِ سُورَةِ الْكَهْف عُصِمَ مِنَ الدَّجَّالِ গ্ধ.
“যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম থেকে দশটি আয়াত মুখস্থ করবে তাকে দজ্জাল থেকে নিরাপদ রাখা হবে”।
১০. কুরআনুল কারিমের হিফয নেককার নারীদের দেন মোহর: অনেক আদর্শ পূর্বপুরুষ কুরআনুল কারিমের কতক মুখস্থ সূরার বিনিময় নেককার নারীদের বিয়ে করেছেন। সাহাল ইবনে সাদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, জনৈক নারী নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আমার নফস আপনাকে হেবা করতে এসেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকালেন। অতঃপর তার দিকে তাকালেন ও অবনত করলেন, অতঃপর তিনি মাথা ঝুঁকালেন। মহিলাটি যখন দেখল, তিনি তার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না বসে পড়ল। তার সাহাবিদের থেকে একজন উঠে বলল: হে আল্লাহর রাসূল, যদি আপনার তাকে প্রয়োজন না হয়, আমার নিকট তাকে বিয়ে দিয়ে দিন। তিনি বললেন: তোমার কিছু আছে? সে বলল: না, হে আল্লাহর রাসূল। তিনি বললেন: বাড়িতে যাও, দেখ কিছু পাও কিনা? সে গেল, অতঃপর ফিরে আসল ও বলল: হে আল্লাহর রাসূল কিছু পায়নি। তিনি বললেন: দেখ, যদিও একটি লোহার আঙ্কটি পাও; সে বলল: তবে আমার এ লুঙ্গি আছে, তার জন্য তার অর্ধেক। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:
্রمَا تَصْنَعُ بِإِزَارِكَ، إِنْ لَبِسْتَهُ لَمْ يَكُنْ عَلَيْهَا مِنْهُ شَيْءٌ، وَإِنْ لَبِسَتْهُ لَمْ يَكُنْ عَلَيْكَ شَيْءٌগ্ধ.
“সে তোমার লুঙ্গি দিয়ে কি করবে, যদি তুমি পরিধান কর তার উপর কোনো কাপড় থাকবে না, আর সে পরিধান করলে তোমার উপর কোনো কাপড় থাকবে না”? লোকটি বসে পড়ল, দীর্ঘক্ষণ বসে ছিল, অতঃপর দাঁড়ালো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখলেন সে চলে যাচ্ছে, তাকে ডাকলেন, যখন সে আসল, তিনি বললেন:
্রمَاذَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ؟গ্ধ.
“তোমার সাথে কুরআনের কতটুকু অংশ আছে? সে বলল: আমার সাথে অমুক, অমুক ও অমুক সূরা রয়েছে, সে সবগুলো গণনা করল। তিনি বললেন:
্রأَتَقْرَؤُهُنَّ عَنْ ظَهْرِ قَلْبِكَ؟গ্ধ.
তুমি কি এগুলো মুখস্থ পড়তে পার? সে বলল: হ্যাঁ, তিনি বললেন:
্রاذْهَبْ فَقَدْ مَلَّكْتُكَهَا بِمَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِগ্ধ.
“যাও, তোমার সাথে কুরআনের যে অংশ আছে, তার বিনিময়ে আমি তোমাকে তার মালিক বানিয়ে দিলাম”।
এভাবে উক্ত সাহাবি কুরআনুল কারিম হিফযের বিনিময়ে বিয়ে করেছেন। হিফযের বিনিময়ে কেউ যদি আপনার নিকট মেয়ে বিয়ে না দেয় ধৈর্য দরুন, হিফযকে মোহর ধার্য করে জান্নাতে অনেক হুর বিয়ে করতে পারবেন।
কুরআনুল কারিম হিফয করার পদ্ধতি
আল্লাহ তা‘আলার প্রতি অগাধ মহব্বত ও গভীর হৃদ্যতা থেকে কুরআনুল কারিম হিফয করার প্রতি উদ্যমী হোন। কুরআন হিফয করা সহজ ও তৃপ্তিদায়ক, যদি কতক পদ্ধতির অনুসরণ করা হয়, তাহলে হিফয অতি সহজ, দ্রুত ও গতিশীল হয়। নিম্নে তাই কতিপয় পদ্ধতি উল্লেখ করছি:
১. হিফয করার শুরুতে নিয়ত বিশুদ্ধ করা: অশুদ্ধ নিয়তের কারণে কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম কুরআনুল কারিমের জনৈক কারীকে ডেকে চেহারার উপর ভর করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
্রوَرَجُلٌ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ وَعَلَّمَهُ وَقَرَأَ الْقُرْآنَ، فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا، قَالَ: فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا؟، قَالَ: تَعَلَّمْتُ الْعِلْمَ وَعَلَّمْتُهُ وَقَرَأْتُ فِيكَ الْقُرْآنَ، قَالَ: كَذَبْتَ، وَلَكِنَّكَ تَعَلَّمْتَ الْعِلْمَ لِيُقَالَ عَالِمٌ وَقَرَأْتَ الْقُرْآنَ لِيُقَالَ هُوَ قَارِئٌ، فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِগ্ধ.
“আর ঐ ব্যক্তি যে ইলম শিক্ষা করেছে, অপরকে শিক্ষা দিয়েছে এবং কুরআন পাঠ করেছে। তাকে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত করা হবে। আল্লাহ তাকে জানিয়ে দেবেন তাঁর সকল নেয়ামত, ফলে সে তা জানবে। আল্লাহ বলবেন, ‘এ নেয়ামতসমূহের বিনিময়ে তুমি কি করেছ?’ সে বলবে, ‘আমি ইলম শিখেছি, অপরকে শিখিয়েছি এবং তোমার সন্তুষ্টির জন্য কুরআন পাঠ করেছি।’ তিনি বলবেন, ‘তুমি মিথ্যা বলছ, তবে তুমি এ উদ্দেশ্যে ইলম শিখেছ, যেন লোকেরা তোমাকে আলেম বলে এবং এ উদ্দেশ্যে কুরআন পড়েছ, যেন লোকেরা তোমাকে কারী বলে। আর তা বলা হয়েছে।’ অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ জারি করা হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে-হিঁচড়ে অবশেষে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে”।
২. পার্থিব স্বার্থের জন্য কুরআনুল কারিম হিফয না করা: কুরআনের ভালো হাফিয ও সুললিত কারীদের মাঝে এ জাতীয় বিচ্যুতি বেশী পরিলক্ষিত হয়। অতএব তারা কুরআনুল কারিম দ্বারা পার্থিব সম্পদ, সম্মান, সাথীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব, মানুষের প্রশংসা কুড়ানো ও নিজের দিকে মানুষদের আকৃষ্ট করার ইচ্ছা পরিহার করুন। আল্লাহ তা’আলা বলেন:
﴿مَن كَانَ يُرِيدُ حَرۡثَ ٱلۡأٓخِرَةِ نَزِدۡ لَهُۥ فِي حَرۡثِهِۦۖ وَمَن كَانَ يُرِيدُ حَرۡثَ ٱلدُّنۡيَا نُؤۡتِهِۦ مِنۡهَا وَمَا لَهُۥ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِن نَّصِيبٍ ٢٠﴾ [الشورى: ٢٠]
“যে আখিরাতের ফসল কামনা করে, আমি তার জন্য তার ফসলে প্রবৃদ্ধি দান করি, আর যে দুনিয়ার ফসল কামনা করে আমি তাকে তা থেকে কিছু দেই এবং আখিরাতে তার জন্য কোনো অংশ থাকবে না”। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
্রمَنْ طَلَبَ الْعِلْمَ لِيُجَارِيَ بِهِ الْعُلَمَاءَ، أَوْ لِيُمَارِيَ بِهِ السُّفَهَاءَ، أَوْ يَصْرِفَ بِهِ وُجُوهَ النَّاسِ إِلَيْهِ أَدْخَلَهُ اللَّهُ النَّارَগ্ধ.
“যে ইলম অন্বেষণ করল, যেন তার দ্বারা সে আলেমদের সাথে তর্ক করতে সক্ষম হয়, অথবা তার দ্বারা মূর্খদেরকে বোকা বানাতে সক্ষম হয়, অথবা তার দ্বারা মানুষদের চেহারাকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়, আল্লাহ তাকে জাহান্নামে দাখিল করবেন”।
৩. দোয়া, ইস্তেগফার ও সকাল-সন্ধ্যার যিকরসমূহ পড়া: গুনাহ হিফযের প্রতিবন্ধক, তাই গুনাহ থেকে তওবা করা, হিফযের জন্য দোয়া করা ও সকাল-সন্ধ্যার যিকরসমূহ রীতিমত পাঠ করা কুরআনুল কারিম হিফযের জন্য সহায়ক। সকাল-সন্ধ্যার অযিফা দ্বারা আল্লাহর ইচ্ছায় শয়তান থেকে সুরক্ষা মিলে ও সময় বরকতপূর্ণ হয়। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করার সময় বলতেন:
্রأَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِগ্ধ.
এ দোয়া পাঠকারী সম্পর্কে শয়তান বলে, সারা দিন সে আমার থেকে নিরাপদ হয়ে গেল।
৪. একজন পরহেজগার মুয়াল্লিম নির্দিষ্ট করা ও রীতিমত হালাকায় উপস্থিত থাকা: কুরআনুল কারিম হিফয করার উদ্যোগ নেওয়ার পরবর্তী কাজ হচ্ছে একজন অভিজ্ঞ মুয়াল্লিম ঠিক করা। হিফয করার পূর্বে নির্ধারিত অংশ মুয়াল্লিমকে শুনিয়ে নিন, হিফয শেষে আবার শুনান, তাহলে আপনার হিফয নির্ভুল হবে। মুয়াল্লিম আলিম ও মুত্তাকী হলে কুরআনুল কারিমের হিফয ও তার আমল একসঙ্গে শিখা যায়। অর্থ, তাফসীর, তাকওয়া ও আনুষঙ্গিক অনেক বিষয় জানা যায়, যা হিফযের জন্য সহায়ক। যদি নির্দিষ্ট কোনো হালাকার অধীন হিফয করার সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে সেখানে রীতিমত উপস্থিত থাকা ও রুটিন মোতাবেক হিফয করা।
৫. প্রতিদিন নির্ধারিত সময় হিফয করা: হিফযের ব্রত গ্রহণকারী সর্বপ্রথম পুরো দিনের কাজ ও তার সময় বণ্টন করে নিন। অতঃপর হিফযের জন্য উপযুক্ত সময় নির্ধারণ করুন ও তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করুন। হিফযের পরিমাণ কম বা বেশী যাই হোক প্রতিদিন নির্ধারিত সময় হিফয করুন। হিফযের জন্য তিনটি সময় বেশ উপযোগী: ক. ফজর সালাতের পূর্বাপর; খ. আসর সালাতের পর; ও ঘ. মাগরিব সালাতের পর।
ক. ফজর সালাতের পূর্বাপর: এশার পর দ্রুত ঘুমিয়ে ফজরের পূর্বে উঠে আল্লাহর তাওফিক মোতাবেক কয়েক রাকাত তাহাজ্জুদ পড়ুন, অতঃপর জামাতের পূর্বাপর ত্রিশ থেকে চল্লিশ মিনিট হিফয করুন। ভোর বেলার হিফয দিনের কর্মস্থলে সময়-সুযোগ মত পাঠ করুন। এ সময় হিফযকারীকে অবশ্যই এশার পর রাতের প্রথম অংশ ঘুমাতে হবে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন:
্রأَنّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَكْرَهُ النَّوْمَ قَبْلَ الْعِشَاءِ وَالْحَدِيثَ بَعْدَهَاগ্ধ.
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার পূর্বে ঘুমানো ও তারপর কথা বলা অপছন্দ করতেন”। পাবলিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত ও ব্যবসায়ীরা এ সময় হিফয করতে পারেন।
খ. আসর সালাতের পর: স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছাত্রদের জন্য এ সময়টা বেশ উপযোগী। আসর সালাত যারা প্রথম ওয়াক্তে পড়েন-তাদের জন্য এ সময়টা খুব দীর্ঘ; আর যারা পরবর্তী সময়ে পড়েন-তারা এতে কম সময় পান, অতএব তারা আসর সালাতের পূর্বে ত্রিশ-চল্লিশ মিনিট হিফয করুন।
গ. মাগরিব সালাতের পর: হাফেযি মাদ্রাসা কিংবা বড় মাদ্রাসার অধীন হিফয শাখার ছাত্ররা এ সময় হিফয করে। শিক্ষকতা পেশায় জড়িত ও সরকারী চাকুরীজীবীরা সাধারণত এ সময় অবসর থাকেন, তারা এতে হিফয করতে পারেন।
৬. কিভাবে হিফয করবেন: হিফয শুরু করার পূর্বে নির্ধারিত অংশের তিলাওয়াত ওয়াকফসহ শিখে নিন। ‌এক-লাইনকে দু’ভাগ করা বা দু’শ্বাসে পড়ার প্রয়োজন হলে, কিংবা বড় আয়াত ছোট-ছোট অংশে ভাগ করার প্রয়োজন হলে ওয়াকফ্ করার স্থান জেনে নিন, যেন অর্থ ঠিক থাকে ও পড়া শ্রুতিমধুর হয়। প্রথম আয়াত হিফয শেষে পরবর্তী আয়াত হিফয করুন এবং উভয় আয়াত একসাথে মিলিয়ে পড়ার পদ্ধতি জেনে নিন। এভাবে হিফয পরিপক্ব হয়। ধীরেধীরে হিফয করুন, সম্ভব হলে নির্ধারিত অংশের অর্থ জেনে নিন, তাহলে হিফয দ্রুত ও দীর্ঘস্থায়ী হবে। নির্ধারিত সময়ে যতটুকু হিফয করা সম্ভব হয় তাই হিফয করুন ও তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করুন। অতিরিক্ত চাপ ত্যাগ করুন এবং নতুন হিফযের তুলনায় পুরাতন হিফযের প্রতি অধিক মনোযোগ প্রদান করুন।
হিফয করা অংশ সুন্নত, নফল ও ফরয সালাতে তিলাওয়াত করুন। শেষ রাতের সালাতে তিলাওয়াত করা অধিক উত্তম, তখন আল্লাহ স্বীয় মর্যাদা মোতাবেক দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন, আর বান্দাদের ডেকে বলেন:
্রمَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُগ্ধ.
“কে আমাকে আহ্বান করবে আমি তার ডাকে সারা দিব, কে আমার নিকট প্রার্থনা করবে আমি তাকে প্রদান করব, কে আমার নিকট ইস্তেগফার করবে আমি তাকে ক্ষমা করব”।
হিফয করা অংশ কখনো দেখে কখনো মুখস্থ পড়ুন, সর্বদা দেখে পড়া হিফযের জন্য ক্ষতিকর, অনুরূপ সর্বদা মুখস্থ পড়া হিফয ও শুদ্ধতার জন্য বিপজ্জনক। কুরআনুল কারিমের প্রতি অধিক দৃষ্টি হিফযকে দৃঢ় করে, মনোযোগে গভীরতা আনে ও আয়াতের সাথে আন্দোলিত হতে সাহায্য করে, তাই চিন্তা ও গবেষণার উদ্দেশ্যে দেখে-দেখে কুরআনুল কারিম তিলাওয়াত করুন। আবার হিফযকে যাচাই ও নজরদারী করার জন্য মুখস্থ পড়ুন।
৭. নেককার প্রতিযোগী গ্রহণ করা: কুরআনুল কারিম হিফয করার জন্য নেককার প্রতিযোগী গ্রহণ করুন। হিফযের ক্ষেত্রে সহপাঠী কেউ থাকলে দু’জনের মাঝে সুন্দর প্রতিযোগিতা গড়ে উঠে, হিফযের সাহস ও স্পৃহা বৃদ্ধি পায় এবং সর্বদা মনে পড়ে যে, এ কল্যাণের ক্ষেত্রে আমার সাথী আমাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
৮. পিছনের পড়ার প্রতি যতœ নিন:
কুরআনুল কারিম খুব দ্রুত হিফয হয়, কিন্তু রীতিমত তিলাওয়াত না করলে দ্রুত ভুলিয়ে দেওয়া হয়। ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
্রإنَّمَا مَثَلُ صَاحِبِ الْقُرْآنِ كَمَثَلِ الإِبِلِ المُعَقَّلَةِ، إِنْ عَاهَدَ عَلَيْهَا أَمْسَكَهَا، وَإِنْ أَطْلَقَهَا ذَهَبَتْগ্ধ. متفقٌ عَلَيْهِগ্ধ.
“নিশ্চয় কুরআনের ধারকের উদাহরণ বাঁধা উটের উদাহরণের ন্যায়, যদি সে তাকে বেঁধে রাখে আটকে রাখবে, আর তাকে ছেড়ে দিলে সে চলে যাবে।” মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, মুসা ইবনে উকবাহ অত্র হাদিস শেষে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন:
্রوَإِذَا قَامَ صَاحِبُ الْقُرْآنِ فَقَرَأَهُ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ ذَكَرَهُ، وَإِذَا لَمْ يَقُمْ بِهِ نَسِيَهُগ্ধ.
“কুরআনুল কারিমের ধারক যদি (কুরআন নিয়ে) কিয়াম করে, অতঃপর দিন-রাত তা তিলাওয়াত করে, তাহলে কুরআন স্মরণ রাখবে, আর যদি কুরআন নিয়ে কিয়াম না করে তা ভুলে যাবে”।
পিছনের হিফয দৃঢ় করে সামনে মুখস্থ করুন। প্রতিদিন হিফযের জন্য যে সময় নির্ধারিত থাকবে, অল্প হলেও তাতে পিছনের পড়ার রুটিন রাখুন। হিফযের পরিমাণ বেশী হলে কখনো নতুন হিফয বন্ধ করে পিছনের হিফয মজবুত করুন। এতে ঢিলেমি না করা, কারণ পিছনের পড়া মুখস্থ না থাকলে হিফযের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়। আবার এ ইচ্ছাও না করা যে, সবক শেষ করে পরবর্তীতে হিফয মজবুত করব, এ জাতীয় ইচ্ছা সাধারণত পূরণ হয় না।
৯. কুরআনুল কারিম শিক্ষার্থীর কতিপয় গুণগান: পোশাক, শরীর ও মুখমণ্ডল পরিষ্কার রাখা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, মুয়াল্লিম ও সহপাঠীদের সাথে বিনয়ী ও সহনশীল হওয়া, তাদের সাথে আদব রক্ষা করা। মুয়াল্লিমের সামনে উঁচু সরে কথা না বলা, যদিও তার বয়স কম হয়। অধিক হাসাহাসি ও খেলা-ধুলা ত্যাগ করা, তবে হাসি-খুশি থাকা, যেন তার প্রতি মুয়াল্লিমের মহব্বত সৃষ্টি হয়।
মুয়াল্লিম থেকে কখনো কঠোর আচরণ প্রকাশ পেলে তাকে পরিহার না করা, আদব রক্ষা করা ও পড়া-শুনার প্রতি আগ্রহী থাকা। কুরআন পবিত্র বীজের ন্যায়, যা উর্বর ও পরিচ্ছন্ন জমি ব্যতীত গজায় না, তাই কুরআনুল কারিম হিফযের জন্য হিংসা ও কপটতা মুক্ত পবিত্র অন্তর থাকা চাই। হিংসা করার অর্থ আল্লাহর তকদীরে আপত্তি করা। আবার কারো হিংসার পাত্র হতে নেই, কারণ চোখেরও হক আছে। অতএব বদ-নজর থেকে সুরক্ষা ও ইখলাস ধরে রাখার স্বার্থে আপনার হিফয গোপন রাখুন। সৎ ও মহৎ চরিত্রগুণে গুণান্বিত হোন, অহংকার ও অহমিকা থেকে মুক্ত থাকুন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
্রوَمَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ لِلَّهِ إِلَّا رَفَعَهُ اللَّهُগ্ধ.
“আল্লাহর জন্য কেউ বিনয়ী হয়নি তবে অবশ্যই আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন”।
১০. নির্দিষ্ট ছাপার কুরআন পড়া: হিফযের শিক্ষার্থীদের অবশ্যই নির্দিষ্ট ছাপার কুরআন তথা হাফেযি কুরআন পড়া জরুরি। কারণ স্মৃতি শক্তির ন্যায় চোখও হিফয করে, তাই হাফেযি কুরআন পড়লে সূরা ও আয়াতের অবস্থান মনে থাকে, প্রয়োজনের সময় নির্দিষ্ট স্থান থেকে নির্দিষ্ট আয়াত খোঁজে নেওয়া সহজ হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন